নিজস্ব প্রতিবেদক: পটুয়াখালীতে তারুণ্য উৎসব উপলক্ষে ডায়াবেটিক সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত ডায়াবেটিস চিহ্নিতকরণ কর্মসূচিতে আওয়ামী লীগের এক প্রভাবশালী নেতার উপস্থিতি নিয়ে জেলাজুড়ে শুরু হয়েছে সমালোচনা। জেলা প্রশাসক, জেলা বিএনপির আহ্বায়কের সঙ্গে অতিথি চেয়ারে ছিলেন পটুয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য মো. শফিকুর রহমান (চাঁন মিয়া)। ১৩ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) তারুণ্যের উৎসব উপলক্ষে পটুয়াখালী ডায়াবেটিক হাসপাতালে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। শফিকুর রহমান চাঁন পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি এবং জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়- জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীনের ডান পাশে ছিলেন সিভিল সার্জন ডা. মো. কবির হাসান, তার পাশে ছিলেন পটুয়াখালী পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মোস্তাক আহমেদ পিনু এবং সর্বশেষ পটুয়াখালী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রশিদ চুন্নু মিয়া। জেলা প্রশাসকের বাম পাশে ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) যাদব সরকার এবং তার বাম পাশে বসেন জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য (তালিকায় ১৭ নম্বর) মো. শফিকুর রহমান (চাঁন)।
অনুষ্ঠানের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পরই শুরু হয় বিতর্ক। একদিকে আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ নেতা বিএনপি নেতাদের পাশে বসে কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ায় রাজনৈতিক মহলে নানা প্রশ্ন ওঠে। অন্যদিকে, সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে রাজনৈতিক নেতাদের অবস্থান নিয়েও আলোচনা শুরু হয়েছে।
৫ আগস্ট পরবর্তী আওয়ামী লীগের নেতৃস্থানীয় অধিকাংশ নেতা পলাতক কিংবা আত্মগোপনে থাকলেও জেলা আওয়ামী লীগের বেশ কিছু নেতা এখনও জেলা শহরে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। অভিযোগ রয়েছে বিএনপির একটি পক্ষ এসব নেতার আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছেন।
ডায়াবেটিক সমিতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সমিতির আজীবন সদস্য হওয়ার কারণেই শফিকুর রহমান চাঁনকে দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) যাদব সরকার বলেন, ‘তিনি (শফিকুর রহমান চাঁন) কীভাবে পাশে বসলেন, তা বলতে পারবো না। আমাদের দাওয়াত দেওয়া হয়েছিল, আমরা সেখানে গিয়ে বসেছি। আয়োজকরা এ বিষয়ে ভালো বলতে পারবেন।’
ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর শিকদার বলেন, ‘অনুষ্ঠানে যারা ছিলেন, তারা সবাই সমিতির আজীবন সদস্য। এখানে প্রধান অতিথি বা বিশেষ অতিথির কোনো ব্যবস্থা ছিল না, ডিসি স্যার সভাপতি ছিলেন। তবে কেউ চেয়ারে বসলে তাকে উঠিয়ে দেওয়া সম্ভব না।’
আওয়ামী লীগ নেতার এই উপস্থিতি নিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। অনেকেই মনে করছেন, এটি স্থানীয় রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। কেউ কেউ বলছেন, বিএনপি নেতাদের সঙ্গে একই মঞ্চে বসার ঘটনা দলীয় আদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।