শুক্রবার, ডিসেম্বর ৫, ২০২৫

বৈরী আবহাওয়া, খালি হাতে ঘাটে ফিরছেন জেলেরা

মোঃ মাহতাব হাওলাদার, মহিপুর প্রতিনিধি: পায়রা সমুদ্র বন্দরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত বহাল থাকায় উত্তাল সাগরে জীবনের ঝুঁকি না নিয়ে উপকূলীয় অঞ্চলের শত শত জেলে ট্রলার নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরে এসেছেন। বৈরী আবহাওয়ার কারণে অধিকাংশ ট্রলার মাছহীন অবস্থায় ঘাটে ফিরেছে, এতে করে নিষেধাজ্ঞা পরবর্তী মাছ ধরার মৌসুমে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন জেলেরা।
বুধবার (১৮ জুন) সরেজমিনে খাপড়াভাঙ্গা নদীর দুই তীরে মহিপুর-আলীপুর মৎস্য বন্দরে দেখা গেছে, শতাধিক মাছ ধরা ট্রলার নোঙর করে রাখা হয়েছে। জেলেরা জানান, সরকার ঘোষিত ৫৮ দিনের মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা শেষে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের আশায় সমুদ্র যাত্রা করেছিলেন তারা। কিন্তু মাত্র কয়েকদিন ফিশিং করার পরই বৈরী আবহাওয়া শুরু হলে তারা বাধ্য হন তীরে ফিরে আসতে।
জেলে মোঃ মোশাররফ মাঝি জানান, সরকারের ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আশানুরূপ ইলিশের আশায় সমুদ্রে গিয়েছিলাম। ৩-৪ দিন থাকার পরেই আবহাওয়া খারাপ হয়ে যায়, তাই শূন্য ট্রলার নিয়েই আবার ঘাটে ফিরছি।
জেলে মোঃ হানিফ মাঝি জানান, নিষেধাজ্ঞা শেষে দুই লাখ টাকার বাজার নিয়ে সমুদ্রে গিয়েছিলাম। তবে দুইদিন ফিশিং করার পরে সমুদ্র উত্তাল হয়ে যায়। সমুদ্রে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ মনে হওয়ায় তীরে ফিরে এসেছি। ইলিশ পাইনি, তবে অন্য প্রজাতির কিছু মাছ পেয়েছি যা প্রায় এক লাখ টাকায় বিক্রি হবে।
মহিপুর সাহানা মৎস্য আড়ৎ এর মালিক মোঃ ইলিয়াস রেজা বলেন, অনেক আশা নিয়ে সাগরযাত্রা করেছিলেন জেলে ভাইয়েরা। তবে হঠাৎ সমুদ্র উত্তাল হয়ে ওঠায় অনেকেই ঘাটে ফিরে এসেছেন।
মহিপুর মৎস্য আড়ৎদার মালিক সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব রাজু আহমেদ রাজা বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে ধার দেনা করে সমুদ্রে গিয়েছিলেন বন্দরের জেলেরা। হঠাৎ আবহাওয়া খারাপ হওয়ায় সবাই ফিরে এসেছেন। শতকরা ৮০ শতাংশ ট্রলার খালি হাতে ফিরেছে।
আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বঙ্গোপসাগর উত্তাল রয়েছে। এজন্য পায়রা সমুদ্র বন্দরকে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। একইসাথে জানানো হয়েছে, বুধবার সকাল ৯টা পর্যন্ত পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায় ১২১.১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আগামী ২৫ জুন পর্যন্ত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে এবং ভারী বর্ষণের আশঙ্কা রয়েছে।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, বৈরী আবহাওয়ার কারণে নিষেধাজ্ঞা শেষ হলেও গভীর সমুদ্রে যাওয়া জেলেদের ভাগ্য সহায় হয়নি। আবহাওয়া অনুকূলে না থাকায় খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে তাদের। এতে করে ট্রলার মালিকসহ জেলেরা বড় ধরনের আর্থিক লোকসানে পড়েছেন। তবে আশা করছি, আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে জেলেরা আবার মাছ ধরায় ফিরতে পারবেন। এবছর সমুদ্রে ভালো পরিমাণ মাছের সম্ভাবনার খবর পাওয়া যাচ্ছে।

আরো পড়ুন

বাবুগঞ্জের ইউএনও’র বদলি স্থগিতের দাবিতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে মানববন্ধন

বাবুগঞ্জ প্রতিনিধি।। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার জনপ্রিয়, জনবান্ধব ও মানবিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আহমেদের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *