শুক্রবার, ডিসেম্বর ৫, ২০২৫

৪৩ শিক্ষার্থীকে বোনস প্রদানের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু শেবাচিম বোনস ব্যাংকের

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রথমধাপে ৪৩ শিক্ষার্থীকে বোনস প্রদানের মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু শেবাচিম বোনস ব্যাংকের

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের নবাগত ৫৬ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের বোনস তুলে দেয়ার মাধ্যমে অফিসিয়াল যাত্রা শুরু করে শেবাচিম বোনস ব্যাংক (SBMC Bones Bank)। রবিবার দুপুর ২.৩০ ঘটিকায় কলেজের ২ নং গ্যালারীতে বোনস বিতরণ প্রোগ্রামের আয়োজন করা হয়। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ৫১তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে নবাগত ব্যাচের ৪৩ জন শিক্ষার্থীকে ১৮ সেট বোনস প্রদান করা হয়। শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত ইনকিলাব শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সংসদ-এর একাডেমিক উইং এর একটি প্রজেক্ট এসবিএমসি বোনস ব্যাংক।

বোনস ব্যাংক পরিচালক জুবাইর আহমেদ (৫২ তম ব্যাচ) জানান, “মোট ৮০ জন রেজিষ্ট্রেশনকৃত শিক্ষার্থীদের মধ্য থেকে ৪৩ জনকে আমরা প্রথমধাপে বোনস তুলে দিয়েছি। ক্রমান্বয়ে আরো উল্লেখযোগ্য সংখ্যক আবেদনকারীর কাছে আমরা বোনস সেট পৌঁছে দিবো। বোনস দেয়ার সময় আমরা শিক্ষার্থীদের কিছু শর্ত দিয়েছি। প্রতি দুই কিংবা তিনজনকে একসেট করে বোনস দেয়া হয়েছে। যাদের দুইজনকে একসেট দেয়া হয়েছে তাদের থেকে ৫০০০ টাকা করে এবং যাদের তিনজনকে একসেট দেয়া হয়েছে তাদের থেকে ৪০০০ টাকা করে জামানত নেয়া হয়েছে। প্রথম প্রফ শেষে বোনস ফেরত দেয়ার সময় তাদেরকে তাদের টাকা ফেরত দেয়া হবে। আমাদেরকে এ কাজে যারা সহযোগিতা করেছেন বিশেষ করে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে যারা বোনস সেট দান করেছেন কিংবা স্বল্পমূল্যে আমাদের কাছে সেল করেছেন কিংবা বোনস ব্যাংকে টাকা দিয়েছেন সবার প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। “

ইনকিলাব শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক সংসদের ছাত্র পরিষদের সদস্য সচিব রিফাত মাহমুদ (৫২ তম ব্যাচ) জানান, “শহীদ আবরার ফাহাদ ও জুলাইয়ের শহীদদের স্মৃতি জাগরুক রাখার জন্য আমরা বোনস সেটগুলোর নাম শহীদদের নামে রেখেছি। শহীদ ডা. সজীব সরকার স্মৃতি বোনস সেট নামে আমাদের প্রথম বোনস সেটের নাম রেখেছি এবং বাকিগুলো অন্যান্য শহীদদের নামে রেখেছি। জুলাই না আসলে আমাদের এসব প্রজেক্ট হাতে নেয়ার সুযোগ আসতো না। জুলাইয়ের শহীদেরা ইনকিলাবের সকল কাজের অনুপ্রেরণা। “

ইনকিলাবের ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক তাওহীদুল ইসলাম সিয়াম (৫১ তম ব্যাচ) বলেন, “আমরা তিনটি কারণে এ প্রজেক্ট হাতে নিয়েছি। ১. আমরা বোনস ক্রয় বিক্রয়ের কালচার ধীরে ধীরে বিলুপ্ত করতে চাই। ২. মেডিকেলে এসেই যেনো শিক্ষার্থীরা হাজার হাজার টাকা দিয়ে বোনস কিনতে হবে এ চিন্তায় নিজেদের চিন্তিত করতে না হয়। ৩. ছাত্রলীগের আমলে শিক্ষার্থীদের প্রতি দুইজনকে চল্লিশ থেকে পঁয়তাল্লিশ হাজার টাকায় বোনস ধরিয়ে দিতো। তখন শিক্ষার্থীদের ছাত্রলীগের নেতাদের থেকে বোনস কিনতে বাধ্য করা হতো। আমরা এধরনের সংস্কৃতি ভেঙে দিতে চাই। আমরা শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করবো তারা যেন জীবিত মানুষের মতো মৃত মানুষদেরও যত্ন নেয়। অযত্নে যেন বোনস ফেলে না রাখে। এই সুন্দর সংস্কৃতি যেন তারা পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেয়। “

উদ্যোগটিকে প্রশংসনীয় মনে করছেন শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। বোনস ব্যাংক থেকে বোনস গ্রহণকারী শিক্ষার্থী ইহতেশামুল হক আছীর (শেবাচিম ৫৬ তম ব্যাচ) জানান, “আমাদের জন্য অনেক উপকার হলো বোনস ব্যাংক থাকায়। আমরা বোনস কিনে হারাম কাজে জড়িত হতে হলো না। পাশাপাশি একসাথে অনেকগুলো টাকা বোনসের পিছনে খরচ করতে হলো না। সিন্ডিকেট ভাঙার জন্য এটি একটা কার্যকরী পদক্ষেপ হবে।”

আরো পড়ুন

বাবুগঞ্জের ইউএনও’র বদলি স্থগিতের দাবিতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে মানববন্ধন

বাবুগঞ্জ প্রতিনিধি।। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার জনপ্রিয়, জনবান্ধব ও মানবিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আহমেদের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *