শুক্রবার, ডিসেম্বর ৫, ২০২৫

হাতুড়ি দিয়ে সাক্ষীর কপাল ফাটিয়ে দিলেন আসামিরা

নিজস্ব প্রতিবেদক।। 

ঝালকাঠিতে হত্যা মামলার সাক্ষ্য দিয়ে ফেরার পথে জেলা জজ আদালত চত্বরে সাবেক এক ইউপি সদস্যকে হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগ পাওয়া গেছে আসামিদের বিরুদ্ধে। রোববার (২৭জুলাই) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

‎আহত সাবেক ইউপি সদস্যের নাম আবদুল মন্নান মৃধা ওরফে চুন্নু (৫২)। তিনি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের কয়া গ্রামের বাসিন্দা ও মৃত হাতেম মৃধার ছেলে।

‎জানা যায়, ঘটনার সময় মন্নান মৃধা আদালতে ২০২৩ সালের আলোচিত রুবেল গাজী হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দেন এবং কয়েকজন আসামিকে চিহ্নিত করেন। পরে তিনি মোটরসাইকেলে করে বাড়ি ফেরার সময় আদালত থেকে বের হওয়ার সময় অভিযুক্ত আসামিরা তাকে ঘিরে ধরে মাথাসহ শরীরের বিভিন্নস্থানে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করেন। এসময় তার মোটর সাইকেলটিও ভাঙচুর করা হয়।

‎প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হামলার সময় চুন্নুর চিৎকারে আদালত পাড়ার লোকজন ছুটে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে তাকে রক্তাক্ত অবস্থায় আদালতের এজলাসে নিয়ে যায় উপস্থিত লোকজন। এসময় জেলা ও দায়রা জজ মো. রহিবুল ইসলাম তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন এবং ঝালকাঠি সদর থানা পুলিশের ওসিকে দ্রুত মামলা নিতে নির্দেশ দেন।

‎বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মাহেব হোসেন বলেন, এ ধরনের ঘটনা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। আদালতের মধ্যে এ হামলা বিচার প্রক্রিয়াকে হুমকির মুখে ফেলে দেয়।

‎হামলার শিকার আবদুল মন্নান মৃধা বলেন, আদালতে সাক্ষ্য দিয়ে বের হতেই আসামিরা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালায়। মাথায় ও শরীরে হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত করে ফেলে। আমি ন্যায়বিচার চাই।

‎রুবেল গাজীর বাবা ও মামলার বাদী জসিম গাজী বলেন, আমার ছেলেকে হত্যার পর এখন মামলার সাক্ষিকেও হত্যার চেষ্টা করছে তারা, যাতে করে মামলা ধামাচাপা পড়ে যায়। এটা আমাদের নিরাপত্তার জন্য ভয়ঙ্কর হুমকি।

‎আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালের ১৪সেপ্টেম্বর নলছিটির কয়া গ্রামের একটি ইটভাটার সামনে রুবেল গাজী (২২) নামে এক যুবককে কুপিয়ে আহত করা হয়। পরে তিনি ৪অক্টোবর ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ ঘটনায় তার বাবা ১৮জনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

‎মামলার তদন্ত শেষে চলতি বছরের ৩মে পুলিশ ১২জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। তারা হলেন— অহিদুল ইসলাম মৃধা (২৭), রফিক মৃধা (৩২), সোহেল মাঝি (৩৬), সাইদুল ফকির (২৩), সালাম ফকির (২৩), এনায়েতুর রহমান (৪৬), কালাম খান (৩২), নাসির খান (৪৮), এরশাদ হাওলাদার (৩০), রবিউল হাওলাদার (২০), বাবুল মৃধা (৪৭) ও সোহরাব মৃধা (৪৫)।

‎ঝালকাঠি সদর থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. মনিরুজ্জামান বলেন, আদালতের নির্দেশ হাতে পেয়েছি। দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হবে।

আরো পড়ুন

বাবুগঞ্জের ইউএনও’র বদলি স্থগিতের দাবিতে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে মানববন্ধন

বাবুগঞ্জ প্রতিনিধি।। বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার জনপ্রিয়, জনবান্ধব ও মানবিক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফারুক আহমেদের …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *