গৌরনদী প্রতিনিধি।।
বরিশালের গৌরনদীতে এক কলেজ ছাত্রকে (১৭) বলাৎকারের অভিযোগে খঞ্জাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য কিং মাসুদ সরদারসহ তিন জনের বিরুদ্ধে মডেল একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার (৮অক্টোবর) সকালে ভিকটিম কলেজ ছাত্রের বাবা বাদী হয়ে গৌরনদী মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। ভিকটিম মাদারীপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র। মামলা দায়েরের পর পুলিশ বুধবার ভোর রাতে প্রধান আসামির সহযোগী মো. নিলয় আহম্মেদকে গ্রেফতার করেছে। প্রধান আসামি কিং মাসুদ ইতালী প্রবাসী খাঞ্জাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য ।
এজাহার সুত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অভিযুক্ত খঞ্জাপুর ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য কিং মাসুদ সরদার প্রথমে ফেসবুকে মেসেজ দিয়ে মাদারীপুর সরকারি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র (১৭)র সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে।
পরবর্তীতে মাসুদের পরিকল্পনা মোতাবেক সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ভিকটিমের সহপাঠী ইমন সরদার কৌশল অবলম্বন করে কলেজ ছাত্রকে গৌরনদী উপজেলার সমরসিংহ বাজারে একটি দোকানের সামনে ডেকে নিয়ে যায় এবং মোবাইল ফোনে কিং মাসুদের সঙ্গে কথা বলিয়ে দেন।
এরপর মাসুদের সহযোগী ইমন কলেজ ছাত্রকে ভ্যানযোগে ইল্লা বাসস্ট্যান্ডে নিয়ে যায় এবং সেখান থেকে হাঁটা পথে অন্য একটি চায়ের দোকানে নিয়ে গিয়ে চা পান করায়। সেখানে কিং মাসুদ উপস্থিত হয়ে চায়ের বিল পরিশোধ করে। চা পানের পর কিং মাসুদ তার সহযোগী ইমনের সহায়তায় ভিকটিমকে মাসুদের আরেক সহযোগী নিলয় আহম্মেদের বসত ঘরের পেছনে বারান্দায় নিয়ে আটকে জোর পূর্বক বলৎকার করে। কলেজ ছাত্র অভিযোগ করে বলেন, বিএনপি নেতা কিং মাসুদ তার দুই সহযোগী ইমন ও নিলয়ের সহায়তায় আমাকে নিলয়ের ঘরে আটকে রেখে বিবস্ত্র করে অস্ত্রের মুখে ভয়ভীতি দেখিয়ে জিম্মি করে আমাকে জোরপূর্বক বলৎকার করেছে।
বলৎকারের শিকার কলেজ ছাত্রের বাবা মামলার বাদী এজাহারে উল্লেখ করেন, নিলয় ও ইমনের সহায়তায় কিং মাসুদ আমার কলেজ ছাত্র পুত্রকে অস্ত্র দেখিয়ে ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।
এরপর বিবস্ত্র করে ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাকে জোরপূর্বক যৌনসঙ্গমে বাধ্য করা হয় এবং এতে তার শরীরে আঘাত লাগে। শারীরিক নির্যাতনের পর আসামি কিং মাসুদ ঘটনাটি কাউকে না জানানোর জন্য ছেলেকে নানা ধরনের ভয়ভীতি সহ প্রাণনাশের হুমকি দেয়।
পরবর্তীতে বাড়ি ফিরে কলেজ ছাত্র অসুস্থ হয়ে পড়লে আমরা বিষয়টি অবগত হই এবং থানায় মামলা দায়েরে করি। গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, প্রাথমিক তদন্তে বলৎকারের সত্যতা পাওয়া গেছে।
এ ঘটনায় ভিকটিমের বাবা বাদি হয়ে কিং মাসুদকে প্রধান আসামিসহ তিন জনকে আসামি করে বুধবার থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকা বাড়ির মালিক নিলয় আহম্মেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রধান আসামি কিং মাসুদকে গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা চলছে। গ্রেফতারকৃত মো. নিলয় আহম্মেদকে বুধবার দুপুরে আদালতে প্রেরন করা হয়েছে। ভিকটিমকে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।