বরগুনা প্রতিনিধি : মা ইলিশ সংরক্ষণে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞায় সরকারি সহায়তার চাল পায়নি বরগুনার নিবন্ধিত প্রায় ১১ হাজার জেলে পরিবার। জেলে কার্ড থাকার পরও সহায়তায় তালিকাভুক্ত না হওয়ায় হতাশ তারা। এদিকে জেলে তালিকায় অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে অন্য পেশার মানুষদের অন্তর্ভুক্তির অভিযোগও তুলেছেন জেলেরা।
সরকারের দেয়া নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দেশের বিভিন্ন নদ নদীতে যখন মাছ শিকারে ব্যস্ত অসাধু জেলেরা, তখন ভিন্ন চিত্র বরগুনায়। জেলার লক্ষাধিক জেলে নিষেধাজ্ঞা মেনে নামেনি জলে। শুরু থেকেই জাল-দড়ি গুছিয়ে মনযোগ দেন ২২ দিন পর নদীতে নামার প্রস্তুতিতে। নিষেধাজ্ঞার ২২ দিনে জেলেদের ২৫ কেজি করে সহায়তার চাল দেয়ার কথা থাকলেও এখনও পায়নি জেলার নিবন্ধিত অন্তত ১০ হাজার পরিবার।
জেলেদের মধ্যে একজন বলেন, ‘মানুষ এমনও আছে কাঁদে, কারণ ঘরে চাল নেই। কিন্তু তাদের দেয় না, যারা ধন সম্পশালী, সামনে কথা বলতে পারে। তাদের দেয়।’ অন্য একজন বলেন, ‘অনেকে পাঁচবার, সাতবারও পাইছে। কিন্তু আমরা পাইনি। আমরা সারাবছর জাল টানি কিন্তু আমাদের চাল ঠিকমতো দেয় না।’
নিবন্ধিত হতে পারেনি এমন জেলের সংখ্যা জেলায় অন্তত অর্ধলক্ষ। অথচ অভিযোগ উঠেছে, ইউপি সদস্যদের স্বজনপ্রীতির কারণে নিবন্ধিত জেলেদের ভাগের চালই চলে গেছে ভিন্ন পেশার মানুষের হাতে। এতে ক্ষুব্ধ জেলেরা।
জেলেদের মধ্যে একজন বলেন, ‘তাদের ভোট নেয়া দরকার, তারা সেটা দেখে দেখে জিনিস বিতরণ করে। একজনের পরিবার তো এ ২৫ কেজি চালে চলে না।’ জেলা মৎস্য কর্মকর্তার দাবি, সরকার বরাদ্দ কম দেয়ায় সবাইকে সহায়তা দেয়া সম্ভব হয়নি। তবে আগামীতে সংকট নিরসনে কাজ করছেন তারা।
বরগুনার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন বলেন, ‘আমরা প্রতিবছরই চাই যে, পণ্য পরিপূর্ণভাবে আসুক। সেভাবে আমরা একটা আবেদনও দেই। কিন্তু এটা আসলে নীতি নির্ধারণ মহলের ইস্যু। এটা আমারে হাতে না। আমরা যেটাই করি বরাদ্দ প্রাপ্তি সাপেক্ষে করি। আশা করি এ সমস্যাগুলো ধীরে ধীরে কেটে যাবে।’
ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম উপলক্ষে মা ইলিশ রক্ষায় গত ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত নদী ও সাগরে সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে সরকার। এসময়ে প্রতিবছর বেকার হয়ে পড়ে বরগুনার লক্ষাধিক জেলে।
Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।