হিজলা প্রতিনিধি
“মাতৃত্বকালীন এন সি কার্ড ও ঔষধ নিতে অফিসের খরচ আছে, আমরা এন সি কার্ড করতে পাঁচশত টাকা নেই” এভাবেই বলেন, চর বাউশিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মাহাফুজা বেগম। যদিও সরকারি নির্দেশনায় বলা আছে কমিউনিটি ক্লিনিকের ঔষধ নিতে কোনো প্রকার খরচ বহন করতে হয় না এবং মাতৃত্বকালীন (এনসি)কার্ড দেওয়া হয় বিনামূল্যে।
গত ১৬ নভেম্বর সকালে চর বাউশিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকে যান চিকিৎসার জন্য যান খলিল রাঢ়ী। চুলকানির জন্য (বেনজাইল বেনজোয়েট এপ্লিকেশন) ঔষধ দিয়ে নেওয়া হয় টাকা।সিএইচসিপি মাহাফুজা বেগম দুইশত টাকা নেন। খলিল রাঢ়ী বলেন,চর বাউশিয়া ক্লিনিকের মাহাফুজা আপা বলেন,টাকা ব্যতীত ঔষধ দেওয়া যাবে না।বাধ্য হয়ে টাকা দিয়ে আমি ঔষধ গ্রহণ করি।ভুক্তভোগী খলিল রাঢ়ী ইউএনও অফিসে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ঘটনা এখানেই শেষ নয় গত ৪ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার,সকাল ১১টায় মাতৃত্বকালীন ভাতার আবেদন করার জন্য এনসি কার্ড আনতে চর বাউশিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকে যান মোসাঃ লিপি। তার থেকেও মাতৃত্বকালীন (এনসি)কার্ডের জন্য নেওয়া পাঁচশত টাকা। মোসাঃ লিপি বলেন,এনসি কার্ড চাইলে সিএইচসিপি মাহাফুজা বেগম এনসি কার্ডের জন্য খরচ দাবি করেন।তিনি আমার নিকট থেকে পাঁচ শত টাকা দাবি করেন।পরে পাঁচ শত টাকা নিয়ে এনসি কার্ড দেন সিএইচসিপি মাহাফুজা বেগম।
একই ঘটনা ঘটেছে আরেক ভুক্তভোগী নাজমা বেগমের সাথে মাতৃত্বকালীন ভাতা আবেদনের জন্য এনসি কার্ড পাওয়ার জন্য তার নিকট থেকেও পাঁচ শত টাকা নিয়েছেন সিএইচসিপি মাহাফুজা বেগম। ভুক্তভোগী নাজমা বেগমের ভাই মোঃ শফিকুল ইসলাম বলেন,আমার বোন মাতৃত্বকালীন ভাতার আবেদনের জন্য এনসি কার্ড আনতে গেলে চর বাউশিয়া কমিউনিটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মাহাফুজা বেগম পাঁচ শত টাকা রাখেন।আমি তার কাছে টাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন,এনসি কার্ড করতে অনেক খরচ আছে।খরচ ব্যতীত এনসি কার্ড আমি দেই না।
এলাকাবাসীর অভিযোগ সিএইচসিপি মাহাফুজা বেগম কোন প্রকার নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করেন না।চিকিৎসার জন্য যেকোনো প্রকার ঔষধ গ্রহণ করলে তাকে দিতে হয় টাকা।সময় মেনে ক্লিনিক খোলা রাখেন না তিনি। এলাকাবাসীর দাবি ব্যবস্থা গ্রহণ করে সিএইচসিপি মাহাফুজাকে চর বাউশিয়া থেকে অপসারণ করা হোক। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইলিয়াস সিকদার বলেন,কমিউনিটি ক্লিনিকে ঔষধ দিয়ে টাকা গ্রহণ সম্পূর্ণ বেআইনি।
কারণ এর সকল প্রকার ঔষধের খরচ সরকার বহন করে।ভুক্তভোগীর একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগটি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার নিকট পাঠানো হয়েছে। যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছে। এব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ অনিক বিশ্বাস বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিকে ঔষধ দিয়ে টাকা গ্রহণের বিধান নেই।এর পূর্বেও এই সিএইচসিপির বিরুদ্ধে এনসি কার্ডে টাকা গ্রহণের অভিযোগ ছিল। যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।