শনিবার, ডিসেম্বর ৬, ২০২৫

‎দাখিল মাদ্রাসার ক্লাশ বন্ধ রেখে ‘নূরানী মাদ্রাসা’ পরিচালনা

সোলায়মান ​তুহিন গৌরনদী প্রতিনিধি।।

বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মিয়ারচর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. ফরিদ উদ্দিনের বিরুদ্ধে মাদ্রাসার নিয়মিত শ্রেণী কার্যক্রম বন্ধ রেখে ব্যক্তিগত নূরানী মাদ্রাসা পরিচালনা, অর্থ আত্মসাৎ ও সরকারি বই বিক্রির মতো গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। মাদ্রাসার এডহক কমিটির আহবায়ক (সভাপতি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এই অভিযোগ এনেছেন এবং বৃহস্পতিবার (৪ডিসেম্বর) উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

‎​অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে মাদ্রাসার প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত তিনটি ক্লাশ বন্ধ রেখে প্রতিষ্ঠানের সামনেই একটি ব্যক্তিগত নূরানী মাদ্রাসা চালু করেছেন। দাখিল মাদ্রাসার শিক্ষক দিয়েই প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের সেখানে বেতনের বিনিময়ে পড়ানো হয় এবং এর আয় থেকে সুপার নিয়মিত ভাগ নিচ্ছেন। এ কারণে মূল দাখিল মাদ্রাসায় ওই তিন শ্রেণিতে শিক্ষার্থী শূন্য করে রাখা হয়েছে বলেও অভিযোগ আহবায়ক জাহাঙ্গীর হোসেনের।

‎​লিখিত অভিযোগে আরও উল্লেখ করা হয়, সুপার যোগদানের পর থেকে নানা অনিয়ম শুরু হয়েছে। তিনি সরকারি বই বিক্রি করেছেন এবং চতুর্থ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে ভর্তি ফি, মাসিক বেতন, পরীক্ষার ফিসহ অন্যান্য ফি আদায়ে কোনো প্রমাণপত্র বা রশিদ ব্যবহার করেননি।

‎আদায়কৃত এই অর্থ সুপার ও সাবেক সভাপতি মিলে আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়াও, ২০১৫ সাল থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত এবতেদায়ীর ওই তিন ক্লাসের জন্য সরকার প্রদত্ত পাঠ্য বইগুলো কোথায় গেল, সে বিষয়ে সুপার কোনো সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেননি। এমনকি, একজন সহকারী শিক্ষিকার প্রায় দুই বছর প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকার বিষয়টিও সুপার কৌশলে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে গোপন করে রেখেছেন বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

‎​এ প্রসঙ্গে এডহক কমিটির আহবায়ক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, সাবেক সভাপতির একক ক্ষমতাবলে মোটা অঙ্কের ঘুষের বিনিময়ে সুপার চাকরি গ্রহণ করেন। যোগদানের পর থেকে তিনি সরকার প্রদত্ত টিউশন ফি বাবদ বরাদ্দকৃত অর্থও নিজে একাই ভোগ করে আসছেন। এছাড়া, নিকট আত্মীয়কে পুনরায় সভাপতি বানানোর অপচেষ্টাও তিনি করছেন।

‎​তবে, সকল অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছেন মিয়ারচর দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. ফরিদ উদ্দিন। তিনি জানান, প্রতিষ্ঠানের আগামীর ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে স্থানীয় দুইপক্ষের দ্বন্দ্বের শিকার হচ্ছেন তিনি এবং তার বিরুদ্ধে আনীত কোনো অভিযোগের সত্যতা নেই। তিনি আরও বলেন, তিনি যোগদানের আগেই সাবেক সুপার ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা নূরানী মাদ্রাসাটি চালু করেছিলেন।

‎​লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা নিশ্চিত করে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আব্দুল জলিল জানান, সরেজমিন পরিদর্শন করে নূরানী মাদ্রাসাটি আগামী জানুয়ারি মাসের মধ্যে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অর্থ আত্মসাৎ ও অন্যান্য গুরুতর অভিযোগগুলোর তদন্ত চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।

আরো পড়ুন

বানারীপাড়ায় এক ইলিশের দাম ১৫০০০ টাকা

মাইদুল ইসলাম শফিক।। বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সন্ধ্যা নদীর এক জেলের জালে ২কেজি ৬০০গ্রাম ওজনের একটি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *