নিজস্ব প্রতিবেদক
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, প্রশাসন ধরে নিয়েছে যখন আওয়ামী লীগ থাকবে তখন সবাই আওয়ামী লীগ হয়ে যাবে, আর যখন বিএনপি আসবে তখন সবাই বিএনপি হয়ে যাবে এটাই রুলস অব দ্যা গেইম।
বাবুগঞ্জের মীরগঞ্জ সেতু উদ্বোধন পরবর্তী হেনস্তা এবং দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে সোমবার (৮ ডিসেম্বর) বরিশালে এক সংবাদ সম্মেলনে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনুস সাহেবের সামনে বসে আমি বলেছি, আপনি ঈদে আনন্দের কথা বলছেন। আপনি চাইলেও পারবেন না, যদি আপনি প্রশাসনের ওপর নিয়ন্ত্রণ নিতে না পারেন এবং আপনার প্রশাসনের ওপর কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই এটা আমরা দেখতে পাচ্ছি।
বর্তমান প্রশাসন, ডিসি-এসপিদের দিয়ে দেশে একটা ভালো নির্বাচন হবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে ফুয়াদ বলে, দেশে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নেই। গতকালকের পুরো ঘটনার সময় বাবুগঞ্জের ওসি থেকে শুরু করে পুরো টিম উপস্থিত ছিল, কিছু করেনি, শুধু একটা দুইটা বাঁশি দিয়েছে। এ বাস্তবতায় সরকারের প্রতি আহ্বান, গতকাল বাবুগঞ্জে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর যারা নিশ্চুপ ভূমিকা রেখেছে, তারমধ্যে ওসিকে সাসপেন্ড করতে হবে এবং ঘটনার তদন্ত করে দায়ীদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। সেইসাথে আমার আসেন মুলাদীর নাজিরপুরে গত শনিবারের ঘটনায় দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
তিনি বলেন, মুলাদীতে অনলাইনে একজন উপদেষ্টা অতিথি হিসেবে ছিলেন, আর ঘটনাস্থলে এলজিইডি সচিব ও জেলা প্রশাসকের সামনে অনুষ্ঠান পণ্ড হয়ে গেছে, গোটা প্যান্ডেল নাস্তানাবুদ করে দিয়েছে। সেখানেও পুলিশ কোনো ভূমিকা রাখেনি। এখন এ অবস্থা হলে নির্বাচনের দিন কি ঘটবে? যারা গতকাল, গত পরশু দায়িত্ব পালন করেনি, তারা নির্বাচনের দিনও করবে না। ফলে নির্বাচন কমিশন চাইলেও ভালো নির্বাচন করতে পারবে না।
তিনি বলেন, এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে এখানে ভালো নির্বাচন হবে না। মুলাদী কিন্তু আরো দুর্গম এরিয়া, সেখানে বোট ছাড়া দিনের বেলা ছাড়া ক্যাম্পেইন করা যাবে না। তিনটা জেলার মিলন স্থল আছে সেখানে, ক্রাইম জোন আছে সেখানে। ওখানে বোমার ফ্যাক্টরি আছে, শত শত বছর ধরে ওখানকার মানুষ বোমা বানায়। সেখান থেকে আপনারা ভালো নির্বাচন উঠিয়ে নিয়ে আসবেন, আমরা কি বোকার স্বর্গে বাস করছি?
বাবুগঞ্জের ঘটনার আগে মুলাদীর ঘটনা ঘটায় প্রশাসনকে আগে থেকে সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়েছিল কিন্তু তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি জানিয়ে ফুয়াদ বলেন, মীরগঞ্জ সেতু উদ্বোধন শেষে বক্তব্যে আমি রাষ্ট্রের একটি উন্নয়নের কাজে এলাকাবাসীর সহযোগিতা চেয়েছিলাম। রোববার আমি যে বক্তব্য দিয়েছি সেখানে কোনো দল বা ব্যক্তিকে মেনশন করিনি, কিন্তু ফেরার পথে আমাকে রীতিমতো ঘুসি মারা হয়েছে। আমাদের নেতৃবৃন্দর গায়ে কিলঘুষি লেগেছে, যেটা আমার গায়ে লাগতে পারতো। গতকালকের হেনস্তার বিষয়টি আপনারা দৃশ্যমান দেখেছেন, কিন্তু গত দুই মাস ধরে রেগুলার বেসিসে এই অভিজ্ঞতার শিকার হচ্ছি। আমাদের নেতাকর্মীদের গণসংযোগকালে মারধর করা হচ্ছে, হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে, থানায় যাচ্ছে, মামলা হচ্ছে না।
ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, ন্যূনতম গুন্ডাপাণ্ডা, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীদের রাজনীতি আমরা দেখতে চাই না। খুনের আসামিসহ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মামলার আসামি এবং মাদক ব্যবসায়ীরা মিলে নাকি আমাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করছে, এলাকায় যেতে দেবে না।
তিনি বলেন, প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বলছি- এসব ঘটনায় আপনারা কঠোর অ্যাকশনে যান, তা না হলে আপনাদের অবহেলার কারণে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা যে ভূমিকা রাখছে তার ব্যর্থতা নির্বাচনকে ব্যর্থ করে দেবে এবং এর দায় আপনাদের নিতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে এবি পার্টির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।