নিজস্ব প্রতিবেদক
লিটলম্যাগ বা সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। কারণ, প্রথমত- এ ধরণের প্রকাশনায় সাধারণত আয়ের নির্দিষ্ট কোন উৎস থাকে না, পকেটের পয়সা খরচ করেই ছাপাতে হয়। দ্বিতীয়ত- কোন বেতনভূক্ত কর্মী থাকে না, তাই স্বেচ্ছাশ্রমেই সব কাজ করতে হয়। তৃতীয়ত- লেখক সম্মানী দেয়া হয় না বলে, প্রতিষ্ঠিত লেখকদের লেখা পাওয়া কঠিন হয়। যে কারণে বেশিরভাগ সাহিত্য পত্রিকা বা ম্যাগাজিন একটি, দুটি বা কয়েকটি সংখ্যা প্রকাশের পর বন্ধ হয়ে যায়। সে দিক থেকে মুক্তবুলি ব্যতিক্রম।
২০১৮ সালে বরিশাল থেকে প্রকাশ হওয়া এই ম্যাগাজিনটির একে একে ৩৫টি সংখ্যা বের হয়েছে। শুধু তাই নয়, ক্রমশ এটি সমৃদ্ধ হচ্ছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে, মুক্তবুলি নিজস্ব একটি লেখকগোষ্ঠি তৈরি করতে পেরেছে। শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠিত লেখকদের পাশাপাশি নতুন লেখকদের উৎসাহ দিয়েছে এটি। যে কারণে গড়ে উঠেছে একদল নতুন লেখক। ‘পাঠক যারা, লেখক তারা’ স্লোগানটিকে স্বার্থক করে তুলেছে মুক্তবুলি। আযাদ আলাউদ্দীনের সম্পাদনায় মুক্তবুলি এখন বরিশালের গ-ি পার হয়ে ছড়িয়ে পড়ছে দেশের সব প্রান্তে। প্রচার সংখ্যা বেড়েছে, বিজ্ঞাপনও আসতে শুরু করেছে। তৈরি হয়েছে পাঠক ও লেখকগোষ্ঠি। এটা সম্ভব হয়েছে সম্পাদক ও তার টিমের নিরলস পরিশ্রমের কারণেই।
আযাদ আলাউদ্দীন নিজে প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিক, লেখক ও ভালো সংগঠক হওয়ার কারণে ধীরে ধীরে মুক্তবুলিকে আজকের অবস্থানে আনতে পেরেছেন। ম্যাগাজনটি নিয়ে তার নিরলস পরিশ্রমের বিভিন্ন নজির দেখেছি। তার অনুরোধে কয়েকটি সংখ্যায় আমিও লিখেছি। আবার এমন মানুষ যে, কোনদিন একটি লাইনও লিখেনি- তাকেও তিনি লেখক বানিয়েছেন। ছোট ছোট অ্যাসাইনমেন্ট দিয়ে লেখা নিয়েছেন। বিভিন্ন মত ও পথের মানুষদের সম্মিলন ঘটাতে সফলতা দেখিয়েছেন। নতুন লেখকদের উৎসাহ দিতে নিয়েছেন বিভিন্ন ব্যবস্থা। লেখা ছাপা হওয়ার পর লেখকের হাতে পত্রিকা পৌঁছে দেয়া, পরের সংখ্যার জন্য লেখা জোগাড় করা, বইয়ের দোকানগুলোতে পত্রিকা বিক্রির ব্যবস্থা করা সবই করছেন নিজ হাতে। যার ফলে মুক্তবুলি বরিশাল অঞ্চলসহ সারাদেশের সাহিত্যপ্রেমীদের কাছে প্রিয় হয়ে উঠছে ক্রমশ।