শুক্রবার, মে ৯, ২০২৫
kalapara
kalapara

কলাপাড়ায় ভাঙ্গারী চোরাই চক্র বেপরোয়া

বিশ্বাস শিহাব পারভেজ মিঠু, কলাপাড়া প্রতিনিধি‍॥

কলাপাড়া উপজেলায় ভাঙ্গারী চোরাই চক্র বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র সহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্পের কাজে ব্যবহৃত স্টিল, তামা, লোহা লক্কর ফ্রী স্টাইলে চোরাই পথে বিক্রি অব্যাহত থাকলেও সংস্লিস্ট আইন প্রয়োগকারী সংস্থা নিরব দর্শকের ভুমিকায় অবতীর্ন। চোরাই চক্রের সাথে অর্থ সখ্যাতার বদৌলতে ভাঙারী বানিজ্য জমজমাট।

২০১৬ সাল থেকে রাজনৈতিক দলের প্রত্যক্ষ নিয়ন্ত্রনে এ অবৈধ বানিজ্য চলে আসছে। পায়রা বিদ্যুৎ প্লান্টের একটি অসাধু চক্র ভাঙারী চোরাই বানিজ্যে সরাসরি জড়িত থাকার গুঞ্জন আলোচনার চাউর হয়ে উঠেছে। লোহালক্কর, স্টিল, তামা, সোলার প্যানেল, বিদ্যুৎ ট্রন্সমিটার, ব্যাটারী, টিউবওয়েলের হ্যান্ডেল ভাঙারী ব্যবসায়ীরা পাচার করছে। বিরামহীন অবৈধ বানিজ্যে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে আঙুল ফুলে বটগাছ হবার প্রতিযোগীতায় লিপ্ত রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নের গিলাতলা স্পটে ভাঙারী চোরাই চক্র দুটি টিনের ঘরে চোরাই ভাঙারী সংরক্ষন করে সড়কপথে ট্রাক যোগে ভাঙারী ব্যবসায়ীদের কাছে চলে যায় লোক চক্ষুর অন্তরালে। ধানখালীর গিলাতলা চোরাই স্পটে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র সীমানা প্রাচীরে সুরঙ্গ কেটে চোরাই মালামাল পাচার হচ্ছে রাতদিন সর্বসময়ে। গিলাতলা স্পট থেকে ভাঙ্গারী ব্যবসায়ীদের গোডাউনে চলে যায় এসকল চোরাই মালামাল। গীলাতলায় চোরাই চক্রের সোহেল মোল্লা, কালাম তালুকদার, রাসেল গাজী, বায়জিদ মোল্লা, স্বপন বয়াতী, তৌহীদ মুন্সী, সাইদুল ইসলাম দিনরাত চোরাই ভাঙ্গারী পাচারে লিপ্ত থাকার অভিযোগ বিরাজ মান। ফ্রী স্টাইলে চোরাই চক্র তৎপর থাকলেও রহস্যজনক কারনে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নীরবতায় হাজারো প্রশ্ন বিরাজমান স্থানীয়দের মাঝে।

সংস্লিস্ট প্রশাসনের কতিপয় অসাধু ব্যক্তির অর্থ সখ্যতায় ব্যাঙের ছাতার মতোই গজিয়ে ওঠা ভাঙ্গারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সমাজবিরোধীদের দখলে। কলাপাড়া, মহিপুর, আলীপুর, নোমরহাট সহ সকল হাটবাজারে চোরাই ভাঙারী বিক্রি চলছে বহাল তবিয়তে। উপজেলার চম্পাপুর ইউনিয়ন পরিষদের আওতায় রাখা এলজিইডির মাছুয়াখালী পুরাতন ব্রীজের সম্পূর্ণ লোহার ভিম ও এ্যাঙ্গেল চুরি করে নিয়ে গেছে। প্রায় ২০লাখ টাকা মুল্যের লোহালক্কর নেবার সময়ে ঔ রাতে গোলবুনিয়া গ্রামে যাবার পথে রিন্টু হাওলাদার সহ ১০/১২ জনকে দেখতে পান স্থানীয়রা। এসময় কৃস্নপুরের আলমগীর ফকির, উল্ফা আলামীন, শরাফ উদ্দিন, আনেছ গাজী, মাসুদ হাওলাদার, সাইফুল হাওলাদার সহ আরো অনেকে হামজায় চোরাই মালামাল পরিবহনে রিন্টু হাওলাদারের সাথে থাকার অভিযোগ বিরাজ মান। কলাপাড়া পৌর শহরের হেলিপ্যাড সংলগ্ন চোরাই ভাঙ্গারী মালিক অপুর আড়ৎএ দিনরাত প্রকাশ্যে চোরাই মালামাল বোঝাই ট্রাক লরি লোড আনলোড হচ্ছে। ফেরী ঘাটের কিবরিয়া এখন বেপরোয়া। চোরাই ভাঙ্গারী সংরক্ষনের জন্য অপু ও কিবরিয়া

চোরাই চক্রের মাঝে কোটি টাকা লগ্নির আভাস মিলতে শুরু করেছে। চোরাই ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী কিবরিয়া ইতিপুর্বে চোরাই মালামাল সহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার হাতে আটক হয়ে জেল খেটেছে। অপু সামান্য মেকার থেকে ভাঙ্গারী চোরাই ব্যবসায়ী হিসেবে ফুলে ফেঁপে ওঠেছে। বে আইনি কর্মকান্ড চালিয়ে রাস্ট্রিয় সম্পদ বিনস্ট কারীদের উৎসাহ দিয়ে বেপরোয়া গতিতে চোরাই বানিজ্য অব্যাহত রেখে, লোহা লক্কর চোরাই চক্রকে লালন করে আসছে এ ব্যবসায়ীরা।

এ বিষয় ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী অপু জানান, গিলাতলা থেকে মঙ্গলবার এক গাড়ী ভাঙ্গারী মাল এনেছি। ধানখালীর লোন্দায় ৫ টি সহ কলাপাড়ায় একাধিক ভাঙ্গারী দোকান খুলে ওপেনে মালামাল বেচাকিনি হচ্ছে। অন্য এক ব্যবসায়ী কিবরিয়া বলেন, আমি চোরাই ব্যবসা করিনা, কাগজপত্র থাকলে মাল কিনি এ ছাড়া কিনিনা। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রিন্টু হাওলাদার বলেন, আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ সম্পূর্ণ
মিথ্যে ।

এ বিষয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ রিন্টু তালুকদার জানান, মাছুয়াখালী পুরাতন ব্রীজের সম্পূর্ণ মালামাল রেজুলেশন করে ইউনিয়ন পরিষদে জমা দিয়েছি। এ ব্যাপারে বর্তমান ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ বাবুল মাষ্টার বলেন, আমিও শুনছি কে বা কারা মাছুয়াখালীর পুরাতন ব্রীজের সম্পূর্ণ মালামাল নিয়ে গেছে। এ ব্যাপারে কলাপাড়া থানার ওসি মো.জুয়েল ইসলাম জানান, চোরাই মাল চোরাই পথে নেয়ার সময় অনেক মাল আটক করা হয়েছে। এ বিষয় কেহ মামলা করতে ইচ্ছুক নয়, চোরাই মাল থানার সামনে পরে আছে। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

আরো পড়ুন

শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক স্মরণে

আযাদ আলাউদ্দীন ।। অবিভক্ত বাংলার প্রধানমন্ত্রী শেরে বাংলা একে ফজলুল হকের মৃত্যুর পর ‘শেরে বাংলার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *