শনিবার, ডিসেম্বর ১৩, ২০২৫

পিরোজপুরের পণ্য বিশ্বের ২৫টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার গাঁওখালীর সোনাপুর গ্রাম। একসময় চরম দারিদ্র্যের মধ্যে থাকা এই গ্রামের তিন শতাধিক পরিবার এখন কচুরিপানা থেকে আয় করে নিজেদের ভাগ্য বদলেছে। এককালে মূল্যহীন বলে বিবেচিত কচুরিপানা এখন তাদের কাছে ‘সবুজ সোনা’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে। শুধু দেশের বাজারেই নয়, এটি বিশ্বের ২৫টি দেশে রপ্তানি হচ্ছে এবং তৈরি হচ্ছে আকর্ষণীয় সব পণ্য।

‎সোনাপুর গ্রামের গৃহবধূ আকলিমা বেগম জানান, একসময় তীব্র অভাবে দিন কাটলেও এখন কচুরিপানা শুকিয়ে মাসে ৭-৮ হাজার টাকা আয় করে তারা ভালো আছেন। এই গ্রামসহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের শত শত পরিবার এখন কচুরিপানা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে। গ্রামের প্রায় ৯৫ শতাংশ পরিবারই কোনো না কোনোভাবে এই পেশার সঙ্গে জড়িত। সকাল হলেই নারী-পুরুষ, এমনকি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরাও ছোট নৌকা নিয়ে নদীতে যায় কচুরিপানা সংগ্রহ করতে। এখানে মূলধন বলতে শুধু তাদের শ্রম। প্রায় আড়াই কেজি কাঁচা কচুরিপানা শুকিয়ে এক কেজি শুকনো কাঁচামাল তৈরি হয়, যার প্রতি কেজির দাম ৫০ টাকা।

‎উদ্যোক্তা রফিকুল কবির  জানান, মাঘ মাস থেকে জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত প্রধান মৌসুম হলেও সারা বছরই কচুরিপানা সংগ্রহ করা হয়। কাটার পর এটি শুকাতে পাঁচ-ছয় দিন সময় লাগে এবং এরপর বাজারে বিক্রি করা হয়। প্রতি মাসে প্রায় ১০ টন কচুরিপানা কেনাবেচা হয়। কোনো পুঁজি ছাড়াই গ্রামের মানুষেরা এ থেকে আয় করছে। বর্তমানে এ গ্রামের প্রায় ৩০০ পরিবার কচুরিপানার মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করছে।

‎শুধুই কাঁচামাল হিসেবে বিক্রি নয়, এই কচুরিপানা এখন বৈচিত্র্যময় রপ্তানি পণ্যে রূপান্তরিত হচ্ছে। দৃষ্টিনন্দন ফুলঝুড়ি, বাহারি পাপোশ, পাটি, ফুলদানি, এমনকি জায়নামাজ, ব্যাগ, টুপিও তৈরি হচ্ছে কচুরিপানা থেকে। এর ফলে আন্তর্জাতিক বাজারেও এর ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। একসময় কেউ ফিরেও তাকাত না যে কচুরিপানার দিকে, সেটিই এখন বদলে দিচ্ছে সোনাপুর গ্রামের দৃশ্যপট। এটি শুধু জীবিকার উৎসই নয়, গ্রামের নারীদের এগিয়ে যাওয়ার এক শক্তিশালী মাধ্যমও বটে।

আরো পড়ুন

সাহেবের হাট বাজার ব্যবসায়ীর মৃত্যু, শোকাহত পরিবারের পাশে অ্যাড হেলাল

যোবায়ের হোসাইন, বন্দর প্রতিনিধি বরিশাল সদর উপজেলার টুঙ্গিবাড়িয়া ইউনিয়ন উত্তর বিশারদের স্থানীয় বাসিন্দা মো.সুলতান হাওলাদর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *