শুক্রবার, ডিসেম্বর ৫, ২০২৫

বিএনপি নেতাদের হুমকিতে ভোলার রাজনীতি উত্তপ্ত

আজিম উদ্দিন খান, লালমোহন
ভোলা জেলার রাজনীতিতে ক্রমেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ছে। এই উত্তেজনায় উত্তাপ ছড়িয়েছে বোরহানউদ্দিন-দৌলতখান বিএনপির সাবেক এমপি হাফিজ ইব্রাহিমের উত্তেজনাকর বক্তব্যে। তিনি গত ১৭ নভেম্বর প্রকাশ্যে জন সমাবেশে ঘোষণা দেন, “যেখানে জামায়াতের কর্মী পাওয়া যাবে সেখানে তাদেরকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করবে।
এটা আমার নির্দেশ।” সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার হওয়ার পর ছড়িয়ে পড়ে জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদের উপর হুমকি ধামকির ঘটনা। এক পর্যায়ে গত ১৮ নভেম্বর জামায়াতে ইসলামীর এক কর্মীকে বিএনপির কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালিয়ে আহত করে।
এর প্রতিবাদে বোরহানউদ্দিন পৌরসভা জামায়াতে ইসলামী প্রতিবাদ সমাবেশ ও বিক্ষোভের ডাক দেয়। অন্যদিকে চরফ্যাশনে জামায়াতে ইসলামীর কর্মীর উপর প্রকাশ্যে হামলার ঘটনা ঘটেছে। লালমোহনে জামায়াতে ইসলামীর নারী কর্মীদের সাথে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা অশালীন ভাষায় গালিগালাজ ও নাজেহাল করে। বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রতিদিন হুমকি ধামকির ঘটনা ঘটছে।
এভাবে নির্বাচনের সময় যত ঘনিয়ে আসছে ততই উত্তেজনা যেন সংঘাতে রূপ নিচ্ছে। ফলে বহু আকাঙ্ক্ষিত সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পরিবেশ ঘোলাটে হচ্ছে। শান্তি প্রিয় ভোটারদের প্রত্যাশা এখনই নেতাদের সতর্ক না হলে এবং সচেতন না থাকলে নির্বাচনের সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিঘ্নিত হবে। এবং নির্বাচন সংঘাতে রূপ নেবে। ঘটনার সূত্রপাত বোরহানউদ্দিন থেকে শুরু।
বিএনপির প্রকাশ্য জনসভায় সাবেক এমপি হাফিজ ইব্রাহিম ঘোষণা দেন, জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদের উত্তম- মধ্যম দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করার। এর দুদিন পরে জামায়াতের পৌর ৭নং এর বাসিন্দা আলাউদ্দিনকে বিএনপির এক নেতা বোরহানউদ্দিন খাদ্য গুদামের কাছে অতর্কিত হামলা চালিয়ে আহত করে। অন্যদিকে চরফ্যাশনে বিএনপির আনোয়ারের নেতৃত্বে জামায়াতে ইসলামীর জিন্নাগর ইউনিয়নের ওয়ার্ড সভাপতি ও সেক্রেটারির উপর হামলা করে আহত করে।
লালমোহনে নারী কর্মীদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা জুলহাস অশালীন আচরণ ও হুমকি ধামকিতে  উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। অবশ্য পরে উপজেলা নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে। ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নানান ধরনের হুমকি ধামকি অব্যাহত রয়েছে। বোরহানউদ্দিনের ঘটনায় জামায়াত গত বুধবার বিশাল প্রতিবাদ সমাবেশ করে।
বিএনপির হামলাকারীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার খবর পাওয়া গিয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর পৌর আমীর মাওলানা আমান উল্লাহ বলেন, প্রকাশ্য জনসভায় একজন সাবেক এমপি যে ভাষায় কথা বলেছেন, তা সন্ত্রাসের গডফাদারদের মুখে শোভা পায়। অনতিবিলম্বে বিএনপি নেতার এই বক্তব্য প্রত্যাহার করতে হবে। এমাসের প্রথমে  ভোলা শহরের জাতীয় পার্টি (আন্দালিব রহমান পার্থ ) নেতাকর্মীদের উপর প্রকাশ্যে হামলা করে তাদের অফিস ভাঙচুরের অভিযোগ করেছে বিএনপির বিরুদ্ধে।
সব মিলিয়ে গত একমাসে ভোলার রাজনৈতিক ময়দানে বিএনপি – জামায়াতে ইসলামীসহ অন্যান্য দলের সাথে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড়িয়ে গেছে। এদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা বিএনপির কর্মীদের হুমকি ধামকির অভিযোগ করেন। বিএনপি যদি সবাইকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে যুদ্ধ করে তাহলে অন্য সবাই একজোগে বিএনপির বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাবে।
রাজনীতি সচেতন মহলের দাবি, পরিস্থিতি সংঘাতে যাওয়ার আগেই সবাইকে সংযত আচরণ করা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সব দলের নেতৃবৃন্দকে একত্রে বসে আলাপ আলোচনা করে কর্মীদের দিক নির্দেশনা দেয়া দরকার বলে মনে করেন রাজনীতি বিশ্লেষক মহল।

আরো পড়ুন

অনেক দলের শাসন দেখেছেন, এবার ইসলামের শাসন দেখুন: চরমোনাই পীর

নিজস্ব প্রতিবেদক আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টি সকলের শাসন দেখেছেন। এবার একবার ইসলামের শাসন দেখার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *