রবিবার, ডিসেম্বর ২১, ২০২৫

নেছারাবাদে হাসপাতালে যাওয়ার ঘাট বন্ধ করে পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, ভোগান্তিতে রোগীরা

নেছারাবাদ প্রতিনিধি
পিরোজপুরের নেছারাবাদ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নৌপথে আসা রোগীদের হাসপাতালে যাতায়াতের একমাত্র কার্যকর ঘাটের মুখে একটি পাবলিক টয়লেট বানানো হয়েছে। এতে ঘাটটি দিয়ে হাসপাতালে যাওয়া-আসার পথ বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন নৌপথে আসা রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা।

হাসপাতালের পাশে খালে ঘাটটির অবস্থান। ঝালকাঠি, কাউখালী, বানারীপাড়া, নাজিরপুরসহ আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে রোগীরা ঘাটটি ব্যবহার করে হাসপাতালে যাতায়াত করতেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ঘাটের মাত্র ২০ ফুট পাশে একটি টয়লেট রয়েছে। তারপরও অপরিকল্পিতভাবে ঘাটটি আটকে এর সামনে নতুন টয়লেট বানানো হয়েছে। এডিপি প্রকল্পের আওতায় বাজার উন্নয়নের নামে ৯–১০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ওই টয়লেটে লোকজন খুব কমই যান। এদিকে বর্ষা মৌসুম ও নদীপথনির্ভর এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে ঘাটটি দিয়ে হাসপাতালে যেতেন। ঘাটটি দিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রোগীরা দুর্ভোগে পড়েছেন।

কয়েক মাস আগে ঘাট কিছুটা ভেঙে পাবলিক টয়লেটটি নির্মাণ করা হয়। এ কাজের তত্ত্বাবধানে ছিলেন জগন্নাথকাঠি বাজার কমিটির বর্তমান কয়েকজন নেতা। ঘাটের কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না রেখেই নির্মাণকাজ সম্পন্ন করা হয়।

বাজারের ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এলডিপির বাজার উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় পিরোজপুরে ১০টি মার্কেট নির্মাণের কাজ পায় মেসার্স কোহিনুর এন্টারপ্রাইজ। এর মধ্যে স্বরূপকাঠি পৌর কাঁচাবাজার উন্নয়নের ‘ভেজা মার্কেট’ ভবন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয় ১ কোটি ১০ লাখ টাকা, যার প্রায় ১০ লাখ টাকা ব্যয় করা হয় ওই টয়লেট নির্মাণে।

এ বিষয়ে স্বরূপকাঠি পৌর বিএনপির সভাপতি কাজী কামাল হোসেন বলেন, নেছারাবাদ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নদীপথে বিপুলসংখ্যক রোগী আসে। পাশেই টয়লেট থাকা সত্ত্বেও অতি গুরুত্বপূর্ণ ওই ঘাট নষ্ট করে নতুন টয়লেট নির্মাণ চরম নির্বুদ্ধিতার প্রমাণ। দ্রুত সেখানে একটি কার্যকর ঘাট নির্মাণ করা জরুরি।

বাজার কমিটির সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘জগন্নাথকাঠি বাজারের পূর্ব পাশের পুরোনো ঘাটটি নৌপথে আসা রোগীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আমরা গিয়ে পুরোনো টয়লেটের পাশেই নতুন টয়লেট নির্মাণের অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ ঘাটটি আটকে সামনে নতুন টয়লেট নির্মাণ করা হলো, তা আমাদের বোধগম্য নয়। ওই স্থানে ঘাটটি পুনর্নির্মাণ অত্যন্ত প্রয়োজন।’

জানতে চাইলে জগন্নাথকাঠি বাজার কমিটির আহ্বায়ক কাজী আনিছুজ্জামান বলেন, ‘বর্তমান বাজার ব্যবসায়ী নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে ওখানে টয়লেট বসানো হয়েছে। ঘাটও যেহেতু প্রয়োজন, আমরা তাই বরাদ্দ এনে করে দেওয়ার চেষ্টা করব।’ কবে নাগাদ নতুন ঘাট হবে—জানতে চাইলে নির্দিষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি বাজার কমিটির আহ্বায়ক।

 

আরো পড়ুন

অবদান ছিল, স্বীকৃতি নেই—বরগুনার বজলুর রহমানের নীরব সংগ্রাম

মইনুল আবেদীন খান সুমন, বরগুনা ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অস্ত্র হাতে যুদ্ধে অংশ না …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *