রাজাপুর প্রতিনিধি।।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিপত্র অনুসারে ডেপুটেশন বা অন্য বিদ্যালয়ে সংযুক্তির মেয়াদ সর্বোচ্চ এক বছর থাকা সত্যেও ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা সদরের ২৩নং মনোহরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা উম্মে ফারজানা প্রায় দুই বছর ধরে সংযুক্তিতে রয়েছেন ৩০নং রাজাপুর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এ নিয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা গত ১১ আগষ্ট উক্ত শিক্ষিকার প্রদত্ত সংযুক্তি বাতিল করে নিজ কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার জন্য একটি অফিস আদেশ জারি করলেও চিঠিটি আমলে না নিয়ে ফারজানা এখনো ৩০নং রাজাপুর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস নিচ্ছেন।
জানা গেছে, ২০২৩ সালে ২৩নং মনোহরপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা পবিত্র হজ্ব পালনের উদ্দেশ্যে মক্কা নগরীতে গমন করার পর ফারজানা ডেপুটেশনে সদরের ৩০নং রাজাপুর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের জন্য সাবেক শিক্ষা কর্মকর্তার যোগ সাজসে কাগজ পত্র জমা দেন। আবেদনে প্রধান শিক্ষিকা বাধ সাধতে পারেন বিধায় তার অনুপস্থিতিতে ফারজানা এই কাজটি করেছেন। এরপর সম্পূর্ন অবৈধ ভাবে এখতিয়ার বহির্ভূত ফারজানার সংযুক্তির কার্যক্রম সম্পন্ন করেন তৎকালীন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে ফারজানার কয়েকজন সহকর্মী জানান, শিক্ষক সল্পতার কারনে অনেক সময় অন্য বিদ্যালয় থেকে শিক্ষক সংযুক্তিতে আনা হয়। তবে যে বিদ্যালয়ে ফারজানাকে সংযুক্তি দেয়া হয়েছে সেখানে চাহিদার তুলনায় প্রায় ৪জন শিক্ষক বেশী রয়েছে। এই মুনিবুর রহমান স্যার’কে ফারজানা কিভাবে ম্যানেজ করেছেন কিংবা কোন স্বার্থে মুনিব স্যার ফারজানার জন্য এমন কাজ করেছেন তিনিই ভাল বলতে পারবেন। কেননা সংযুক্তি দেওয়ার ক্ষমতা একমাত্র মহাপরিচালক কর্মকর্তার কার্যালয়। সেখানে মুনিবুর রহমান ফারজানাকে অন্য বিদ্যালয়ে সংযুক্তির জন্য নিজ স্বাক্ষরিত ০২জুলাই ২০২৩ তারিখে মনগড়া একটি অফিস আদেশ বানিয়েছেন যা ছিল সম্পূর্ন অবৈধ। তারা আরও জানান, এই অবৈধ সংযুক্তি বৈধ করতে ফারজানা ২৪সালের ১৬মে মহাপরিচালক থেকে যে কোন ভাবে একই বিদ্যালয়ে সংযুক্তির জন্য নতুন করে আর একটি অফিস আদেশ করান। বিধি অনুযায়ী সেই চিঠির বৈধতা ছিল এক বছর।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ৫জানুয়ারি ২০২৫ এর পরিপত্রে সংযুক্তি এক বছরের বেশী হলে শিক্ষককে মূল বিদ্যালয়ে যোগদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। ফারজানার সংযুক্তির মেয়াদ গত ১৫মে এক বছর পূর্ণ হলে পরবর্তীতে নিজ বিদ্যালয়ে যোগদান করার কথা। কিন্তু তিন মাস পেরিয়ে গেলেও নিজ কর্মস্থলে যোগদান করেননি তিনি। এরপর জেলা শিক্ষা অফিস ১১আগস্ট এক অফিস আদেশে ফারজানাকে মূল বিদ্যালয়ে যোগদানের জন্য নির্দেশ দিলে তিনি এখনও সংযুক্তি বিদ্যালয়ে শ্রেণী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে শিক্ষিকা উম্মে ফারজানা জানায়, আমাকে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ (ডিজি স্যার) এখানে মৌখিক ভাবে থাকতে বলছে যার সুবাদে আমি এখানে থেকে ক্লাস নিচ্ছি।
রাজাপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আকতার হোসেন বলেন,অফিস আদেশ পেয়ে তা আমি ফারজানার কাছে পৌঁছে দিয়েছি। পরবর্তীতে উপরের মৌখিক আদেশে আমি আবার ফারজানাকে সংযুক্তি বিদ্যালয়ে থাকতে বলেছি। আশা করি আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি সমাধান হবে।
Daily Bangladesh Bani বৈষম্য ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমাদের দৈনিক প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে দাঁড়িয়ে, সমাজের অন্ধকার দিকগুলো উন্মোচন করে প্রতিটি মানুষের সমান অধিকারের প্রচার করি।