বাংলাদেশ বাণী ডেস্ক॥
এর আগে, রাজধানী দামেস্কে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ইতোমধ্যে ১৩ ঘণ্টার কারফিউ জারি করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শাম (এইচটিএস)। এই গোষ্ঠীর প্রধান আবু মোহাম্মদ জোলানি বলেছেন, নতুন সরকার গঠনের আগপর্যন্ত সরকারের সব বিভাগ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবেন আসাদ সরকারেরই প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ গাজি আল জালালি।
কে এই জোলানি?
আবু মোহাম্মদ আল-জোলানির আসল নাম আহমেদ হুসাইন আল-শারা। ১৯৮২ সালে তিনি সৌদি আরবের রিয়াদে জন্মগ্রহণ করেন। তখন তার বাবা সেখানে পেট্রোলিয়াম প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করতেন। ১৯৮৯ সালে তার পরিবার সিরিয়ায় ফিরে আসে। দামেস্কের অদূরে বসতি স্থাপন করে।
২০০৩ সালে সিরিয়া থেকে ইরাকে এসে তিনি আল-কায়েদায় যোগ দেন। এই বছরই যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে হামলা চালায়। তিনি সেখানে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলনে যোগ দেন। তখন থেকে তার নাম ছড়িয়ে পড়ে।
২০০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সেনাদের হাতে গ্রেফতার হন জোলানি, পাঁচ বছর পর ২০১১ সালে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধের সময় মুক্ত হন তিনি। কারামুক্ত হয়ে সিরিয়ায় আল-কায়েদার শাখা প্রতিষ্ঠা করেন জোলানি, যা আল-নুসরা ফ্রন্ট নামে পরিচিত।
জোলানির কার্যক্রম
কারামুক্ত হয়ে ২০১১ সালে আল-কায়দার সরাসরি সহযোগী হিসেবে জাবহাত আল-নুসরা নামে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এইচটিএস গোষ্ঠী। সশস্ত্র গোষ্ঠীটির প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন জঙ্গি গোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের (আইএস) নেতা আবু বকর আল-বাগদাদি।
প্রথম দিকের কয়েক বছর জোলানি বাগদাদির সঙ্গে কাজ করলেও ২০১৩ সালের এপ্রিল মাসে বাগদাদি আকস্মিকভাবে আল-কায়েদার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদের ঘোষণা দেন। এরপর জোলানি সিরিয়ায় নিজেদের তৎপরতা বৃদ্ধিতে কাজ শুরু করেন।
২০১৬ সালের জুলাইয়ে বাশার সরকার আলেপ্পোর নিয়ন্ত্রণ নেয়। তখন বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো ইদলিবের দিকে চলে যায়। ওই সময়টাতে জোলানি আল-নুসরা ফ্রন্টের নাম পরিবর্তন করে জাভাত ফাতেহ আল-শাম রাখেন। পরে বিদ্রোহীদের ছোট ছোট অনেক গোষ্ঠী ও নিজের জাভাত ফাতেহ আল-শাম নিয়ে এইচটিএস গঠন করেন জোলানি।
গোষ্ঠীটিকে প্রেসিডেন্ট আসাদ-বিরোধী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কার্যকর এবং প্রাণঘাতী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) ২০১৭ সালে সিরিয়ান স্যালভেশন গভর্নমেন্ট প্রতিষ্ঠা করে। এর মাধ্যমে তারা দেশটির ইদলিবে প্রশাসন পরিচালনা শুরু করে। তবে অধিকারকর্মী, সংবাদ প্রতিবেদন ও স্থানীয় পর্যবেক্ষকদের মতে, সিরিয়ান স্যালভেশন গভর্নমেন্ট কঠোর হাতে শাসন করে, বিরোধীদের সহ্য করে না।
এইচটিএস মূলত ইদলিব কেন্দ্রিক ছিল এবং অনুমান করা হয় গোষ্ঠীটির প্রায় ৩০ হাজার যোদ্ধা রয়েছে। এই গোষ্ঠী মূলত স্ব-অর্থায়নে পরিচালিত হয়ে থাকে।